‘২৪ মে’ উদ্‌যাপন করতে পারবেন মাশরাফিরা?

b2dbbef8b39c097a21dea59f43296f7f-592529409567c.jpg

বাংলাদেশের ক্রিকেটে কিছু ‘তারিখ’ আছে। সাফল্যের এই তারিখগুলো হয়তো আরও অনেক দিন রোমাঞ্চিত করবে, নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত করবে ক্রিকেটপ্রেমীদের। এ দেশের কিছু না পাওয়ার ক্রীড়াঙ্গনে ২০ বছর ধরে ক্রিকেট আমাদের যা কিছু দিয়েছে, এই তারিখগুলো সেই প্রাপ্তিরই।

২৪ মে তারিখটা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অংশ। ১৯৯৯ সালের ২৪ মে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে প্রথম জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এডিনবরার প্রচণ্ড শীতে ব্যাটিং–বিপর্যয়ে পড়েও শেষ অবধি জয় তুলে নেওয়ার আনন্দটা এক স্মরণীয় অধ্যায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে। আজ ১৮ বছর পর আরেকটি ২৪ মে–তে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। মঞ্চটা বিশ্বকাপের মতো বড় না হলেও আজকের ম্যাচ কিন্তু নতুন এক ইতিহাস গড়ারই। ম্যাচটা জিতলেই যে আইসিসির ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের ৬ নম্বরে ওঠার পথ সুগম হবে মাশরাফিদের। নিশ্চিত হবে ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নেওয়া। ২৪ মে তারিখটা তো এমনিতেই স্মরণীয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে। মাশরাফিরা কি পারবেন এই তারিখেই নতুন ইতিহাস গড়তে?

গত শুক্রবার ডাবলিনের মালাহাইডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়টি আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। আইরিশদের ১৮২ রানে গুটিয়ে দিয়ে সেই রান ২৮ ওভারের মধ্যে তাড়া করে পেরিয়ে যাওয়া—আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্স তো অবশ্যই। তবে আজকের ম্যাচে মাঠে নামার আগে খেলোয়াড়দের মনে একটা খচখচানি থাকছেই—ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি যদি জেতা যেত!

আইপিএলের কারণে পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে আয়ারল্যান্ডে আসেনি নিউজিল্যান্ড। ১৭ মে কিউইদের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে হারটা চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতিতে বড় একটা আঘাতই। ম্যাচটা জেতা যেত। ব্যাটিংটা যদি আরও একটু ভালো হতো। ২৫৭ রানে থেমে যাওয়া বাংলাদেশের ইনিংসটা যদি ২৭০-২৮০-তে গিয়ে থামত, তাহলেও হতো। বোলাররা সেদিন আরও অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজেদের কাজটা করতে পারতেন। ৪ উইকেটের সেই হারটা খুব বড় একটা শিক্ষা হয়েই কাজ করেছে বাংলাদেশের জন্য।

সেই শিক্ষাটা কাজে লাগিয়েই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে গত শুক্রবারের আত্মবিশ্বাসী সেই জয়। আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই আত্মবিশ্বাস কাজে লাগলে প্রাপ্তি নেহাতই কম হয় না। জয় তো অবশ্যই বড় প্রাপ্তি, সেই সঙ্গে র‍্যাঙ্কিংয়ে ৬ নম্বরে উঠে যাওয়ার গৌরব একই সঙ্গে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত হওয়া—২৪ মে তারিখটাকে অন্য মাত্রা দেওয়ার মঞ্চটা কিন্তু প্রস্তুতই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আরও একটি হিসাব মেলানোর যে বাকি বাংলাদেশের। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার আগে-পরে মিলিয়ে টেস্ট খেলা অন্য সব দলের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে জয় পেলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সাফল্য অধরাই হয়ে আছে। অথচ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই টেস্ট খেলা দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জয় বাংলাদেশের। কিউইদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৮টি জয়ের সব কটিই এসেছে দেশের মাটিতে।

বিশ্বকাপে প্রথম জয় পাওয়ার গৌরবের তারিখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে প্রথম জয় পাওয়া কিন্তু সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত হওয়ার চেয়ে কম আনন্দের নয়।

Leave a comment